আজ শনিবার, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

দেওভোগে কঠিন সমীকরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

হারার ভয়ে আইভীর এলাকায় কাউন্সিলর প্রার্থী বদল করেছে উত্তরপাড়ার লোকেরা। দলীয় সুত্রের খবর তারা সেই কাউন্সিলর নাজমুল আলম সজলকে এবার সমর্থন দেননি। উপায় না পেয়ে বর্তমান ও সাবেক কাউন্সিলর নিজেরা নির্বাচন না করে নিকটস্থদের দিয়ে নির্বাচন করাচ্ছেন। নাসিক ১৬ নং ওয়ার্ডে রাজনীতির ভেতরের রাজনীতি দৃশ্যমান হচ্ছে। সাবেক কাউন্সিলর ওবায়েদউল্লাহ তার ভাতিজা রিয়াদ হাসানকে সমর্থন দিয়ে তার পক্ষে মাঠে রয়েছেন। এতে করে চাচা ভাতিজার ঐক্যে বিশাল ভোট ব্যাংক তৈরি হয়েছে যা প্রতিহত করা বেশ মুশকিল বটে। যার ফলে বর্তমান কাউন্সিলর নাজমুল আলম সজল তার বন্ধু কবির হোসেনকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। গেলবার তিনি ছিলেন ওসমানদের প্রার্থী। এবার তাকে বদল করেছে–।

সম্প্রতি বন্ধু সজলকে পাশে নিয়ে কবির হোসেন বলেন, সজল মানে কবির, কবির মানে সজল। সজল কাউন্সিলর মানে আমি কাউন্সিলর, আমি কাউন্সিলর মানে সজল কাউন্সিল। সজল যা করবে আমিও তাই করবো।
কাউন্সিলর নাজমুল আলম সজল বলেন, আমার বন্ধু কবির একজন যোগ্য ব্যক্তি। সে নির্বাচন করতে চায়নি। আমরা তার মতের অমিলে মুরব্বিদের নিয়ে তাকে জোর দিয়ে নির্বাচনে দাড় করিয়েছি।

অপরদিকে একই ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ওবায়েদউল্লাহ তার ভাতিজা রিয়াদ হাসানকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থেকেছেন। এই সিদ্ধান্তকে বেশ কৌশলী সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ ২০১৬ সালের নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে চাচা ভাতিজার ভোট ভাগভাগিতে মাত্র কয়েক শ ভোটের ব্যবধানে জয় পেয়ে যায় বর্তমান কাউন্সিলর সজল। ওই নির্বাচনে ১৬নং ওয়ার্ডে ব্যাডমিন্টন প্রতীকে নগর স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি নাজমুল আলম সজল পেয়েছিল ৪ হাজার ৮৩৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ওবায়েদউল্লাহ পেয়েছিল ৪ হাজার ৩২২ ভোট। এছাড়া তার ভাতিজা রিয়াদ হাসানও বেশ ভাল ভোট পেয়েছিল। বেশ হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে প্রায় ৫শ ভোটের ব্যবধানে পরাচিত হয় ওবায়েদউল্লাহ। তবে এবার আর সেই ভুল করছেনা তিনি। এবার এক জোট হয়ে নির্বাচনের মাঠে নেমেছেন তিনি। তাতে কিছুটা চিন্তার ভাজ পড়েছে ওসমান বলয়ের প্রার্থী কবিরের।

সূত্র বলছে, বিগত নির্বাচনে সজল হারতে হারতে কোন রকমে জয় পেয়েছিল। আর এবার দুই চাচা ভাতিজা এক হওয়াতে যে ভোট ব্যাংক তৈরি হয়েছে এতে নিশ্চিত জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। একারণে বর্তমান কাউন্সিলর সজল বেগতিক পরিস্থিতি বুঝতে পেরে নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়িয়েছেন। তবে সজল ফাঁকা মাঠে গোল করতে দিবেনা । একারণে তার বন্ধু কবির হোসেনকে নির্বাচনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন। যাতে করে হার জিত যাই হোকনা কেন কাউন্সিলর সজলকে যেন লোকসান গুণতে না হয়।

সুত্রের খবর এবার ১৬ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৪ জন প্রার্থী থাকলেও আলোচনা মূলত দুই প্রার্থীকে নিয়েই। ঘুড়ি প্রতীকে লড়ছেন রিয়াদ হাসান, ব্যাডমিন্টন প্রতীকে লড়ছেন কবির হোসেন, মিষ্টি কুমড়া প্রতীকে সাইদুল ইসলাম , ঠেলাগাড়ি প্রতীকে মাকিদ মোস্তাকিম শিপলু।

স্থানীয়রা বলছে- এ ওয়ার্ডে এবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। কে জিতবে তা এখন বলা যাচ্ছে না। আইভী ও বিএনপি সমর্থকদের উপর নির্ভর করছে তাদের জয়-পরাজয়। আইভী সমর্থকরা কখনো চাইবে না ওসমান বলয়ের কেউ জিতে যাক। আবার শামীম সমর্থকরাও আইভী সমর্থকদের ছাড় দিচ্ছে না। দেখা দিয়েছে জটিল সমীকরণ। মেয়র ,কাউন্সিলর ভোট নিয়ে হচ্ছে নানা বিশ্লেষণ।